সংক্ষেপে মধু হল এক প্রকারের উচ্চ ঔষধি গুণসম্পন্ন মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে মধুকে বলা হয় মহৌষধ। প্রাচীনকাল থেকেই ‘পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক’ হিসেবে বিভিন্নভাবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ মধু গ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশের জাতীয় মধু বোর্ডের সংজ্ঞা অনুযায়ী “মধু হল একটি বিশুদ্ধ পদার্থ যাতে পানি বা অন্য কোন মিষ্টকারক পদার্থ মিশ্রিত করা হয় নাই।”
মধু চিনির চাইতে অনেক গুণ মিষ্টি এক প্রকারের মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ, যা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ ফুলের নির্যাস হতে তৈরি করে এবং মৌচাকে সংরক্ষণ করে। এটি উচ্চ ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি ভেষজ তরল ও এটি সুপেয়।
মধুর মূল উপাদান হচ্ছে পানি, শর্করা বা চিনি, এসিড, খনিজ, আমিষ ও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। শর্করাগুলোর মধ্যে থাকে লেকটোলেজ, ডেকস্ট্রোজ, মলটোজ, ডাইস্যাকারাইড এবং কিছু উচ্চমানের চিনি। মধুতে যেসব এসিড পাওয়া যায়, সেগুলোর নাম সাইট্রিক, ম্যালিক, বুটানিক, গ্লুটামিক, স্যাক্সিনিক, ফরমিক, এসিটিক এসিড। এগুলো মধুতে সক্রিয় হতে পারেনা, কারণ মধুতে পানির পরিমাণ খুব অল্প। প্রাকৃতিক, অপ্রক্রিয়াজাত মধুতে মাত্র১৪% হতে ১৮% আর্দ্রতা থাকে। আর্দ্রতা মাত্রা ১৮% এর নিচে যতক্ষণ থাকে, ততক্ষণ মধুতে কোন জীবাণু বংশ বৃদ্ধি করতে পারেনা।
মধুতে রয়েছে সুগার, যার মিষ্টত্ব তৈরি করা সুগারের চেয়ে অনেকগুণ বেশি। মধুতে প্রায় ১৫ প্রকার সুগার রয়েছে। যেমন- গ্লুকোজ, স্যাকরোজ, ফ্রুকটোজ, মলটোজ ইত্যাদি। এগুলো প্রতিটিই দ্রুত রক্তের সঙ্গে মিশে যায় এবং সহজেই পরিপাক হয়।
বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, মধুর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী জীবাণুনাশক ক্ষমতা। এ ক্ষমতার নাম ইনহিবিন। মধুর সঙ্গে কোনো তরল পদার্থ মিশ্রিত হলে তা তরলীভূত হয়ে পড়ে। গ্লুকোজ অক্সিডেজ নামের বিজারকের সঙ্গে মধুর বিক্রিয়া ঘটলে গ্লুকোনাল্যাকটোন হাইড্রোজেনপার-অক্সাইডে পরিণত হয়। এই বিক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মধুতে ডুবিয়ে দিলে মারা যায়। মধু ইস্টের বংশ বৃদ্ধি ঘটতে দেয় না। একারণে খাঁটি মধু বোতলজাত করে অনেক দিন রাখা যায়।
মধু একটি উৎকৃষ্ট প্রিজারভেটিভ বা সংরক্ষক। চিকিৎসাশাস্ত্রে অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদে ঔষধিগুণ বেশিদিন ধরে রাখার জন্য ওষুধের সঙ্গে অ্যালকোহল বা রেক্টিফায়েড স্পিরিট মেশানো হয়। ইউনানিতে এর পরিবর্তে মেশানো হয় মধু। মিয়ানমারের বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা শবদাহ করার আগে মধুতে ডুবিয়ে রেখে সংরক্ষণ করতেন। মিসরে গিজেহ পিরামিডের গহ্বর মধু দ্বারা পূর্ণ করা ছিল।
বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু স্বাদ, রং, হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধ।
মৌমাছি মধু কিভাবে বানায়?
কর্মী মৌমাছি ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে নিজের শরীরে মধু রাখার জন্য বিশেষ পাকস্থলীতে। সেই পাকস্থলীতে মধু ঢোকামাত্র নানা রকম এনজাইমের ক্ষরণ শুরু হয়, এসব এনজাইম ফুলের মধুর সুক্রোজকে ভাজ্ঞা শুরু করে সাধারণ চিনিতে রুপান্তর করে।
সুক্রোজ হচ্ছে এক ধরনের ডাই- স্যাকারাইড, এটি মূলত তৈরি হয় খুব সাধারণ গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ।
কর্মী মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে মৌচাকের ছয় কোনা প্রকোষ্ঠ উগরে দেয়। মৌচাকের গৃহী মৌমাছিরা সেই মধু আবার মিনিট বিশেকের মধ্যে খেয়ে ফেলে। এদের পাকস্থলীতে গিয়ে সেই মধু আবার এনজাইম দিয়ে নতুন করে ভাজ্ঞা শুরু করে। মৌচাকে যে মধু জমা হয়, তাতে প্রথমে ৭০% পানি থাকে এবং মৌমাছিরা ক্রমাগত ডানা ঝাপটে পানির পরিমাণ কমিয়ে নিয়ে আসে, তখন মধু গাড় হয়।
মধু কি মৌমাছির বমি?
এক অর্থে বমিই বলা যায়। কিন্তু মৌমাছি মধুর জন্য ফুলের যে সূধা বা নেকটার বমি করে বা বারবার উগরে দেয় ও গিলে ফেলে সেটা তার দ্বিতীয় পাকস্থলি থেকে করে, যার নাম মধু পাকস্থলি।
মৌমাছির পাকস্থলি দুটা। একটি দ্বারা সে নিজস্ব খাবার হজম করার কাজে ব্যাবহার করে, আরেকটি মধু বানানোর কাজে ব্যবহার করে। দুটি পাস্থলীর কাজ সম্পুর্ন আলাদা এবং একটি আরেকটির সাথে কোন সম্পর্ক নেই। মৌমাছির এই মধু পাকস্থলীর কোন হজমক্ষমতাও নেই।
বিভিন্ন ফুলের মধুর রং বিভিন্ন কেন হয়?
বিভিন্ন ফল ও ফুলের রং এর মতো মধুও বিভিন্ন রং এর হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী ফুলের সুধা বা নেকটারের বৈশিষ্ট্য।
মধুর সাথে ফুলের সম্পর্ক কি?
মধুর প্রয়োজনীয় উপাদান নেকটার বা সূধা ফুল থেকেই আসে। ফুল না থাকলে মধুই হত না।
আমাদের দেশে কি কি ফুল থেকে মধু হয়?
আমাদের দেশে সবচাইতে বেশী সুন্দরবনের খলিসা, গড়ান, কেওড়া , সরিষা, লিচু, ধনিয়া, বড়ই, কালোজিরা ফুলের মধু হয়, তারপর খুবই সিমীত আকারে আম, সজনে, নিম, তাল ইত্যাদি ফুলের মধুও হয়।
মধু খেয়ে কি বলা যায় সেটা কোন ফুলের মধু?
যারা নিয়মিত খান তারা অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারেন, যদি সে ফুলের মধু তারা আগে খেয়ে থাকেন।
মধুর মিষ্টত্ব কি মধু ভেদে কম বেশি হয়?
হ্যা, ফুল ভেদে মধুর মিষ্টত্ব কম বেশী হয়।
মিষ্টি ছাড়াও কি অন্য কোন স্বাদের মধু আছে?
হ্যা, মিষ্টি ছাড়াও টক, তিতা ও স্বাদহীন মধুও আছে। তবে সেটা আমাদের উপমহাদেশে পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে মাঝে সাঝে টক স্বাদের মধু পাওয়া যায় যেটা গাছের কোটরে হয়ে থাকে।
মধুর গুনাগুণ ও রাসায়নিক উপাদান কি?
মধুর একটি গুণ হল এটি কখনো নষ্ট হয় না৷ হাজার বছরেও মধুর গুণাগুণ নষ্ট হয় না। মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ নামক দুই ধরনের সুগার থাকে। অবশ্য সুক্রোজ ও মালটোজও খুব অল্প পরিমাণে আছে। মধু নির্ভেজাল খাদ্য। এর শর্করার ঘনত্ব এত বেশি যে, এর মধ্যে কোনো জীবাণু ১ ঘণ্টার বেশি সময় বাঁচতে পারে না। এতে ভিটামিন এ, বি, সি প্রচুর পরিমাণ বিদ্যমান। অনেক প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানও আছে। যেমন- এনজাইম বা উৎসেচক, খনিজ পদার্থ (যথা পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ), এছাড়াও প্রোটিন আছে। খাদ্য ও ঋতুর বিভিন্নতার কারণে মধুর রঙ বিভিন্ন হয়ে থাকে। এ কারণেই কোন বিশেষ অঞ্চলে কোন বিশেষ ফল-ফুলের প্রাচুর্য থাকলে সেই এলাকার মধুতে তার প্রভাব ও স্বাদ অবশ্যই পরিলক্ষিত হয়। মধু সাধারণত তরল আকারে থাকে তাই একে পানীয় বলা হয়। মধু যেমন বলকারক খাদ্য এবং রসনার জন্য আনন্দ ও তৃপ্তিদায়ক, তেমনি রোগ ব্যাধির জন্যও ফলদায়ক ব্যবস্থাপত্র।
মধুর আরো একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই যে, নিজেও নষ্ট হয় না এবং অন্যান্য বস্তুকে দীর্ঘকাল পর্যন্ত নষ্ট হতে দেয় না। এ কারণেই হাজারো বছর ধরে চিকিৎসকরা একে অ্যালকোহল (Alcohol)- এর স্থলে ব্যবহার করে আসছেন।
মধু বিরেচক এবং পেট থেকে দূষিত পদার্থ অপসারক।
মধু লিভার, পাকস্থলী, লোমকুপের গোড়া ও মূত্রথলি পরিস্কার করে, হৃদপিন্ড ও কিডনীর রক্ত পরিশোধনে বিশেষ ভুমিকা রেখে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ অপসারনে বিশেষভাবে সহায়তা করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে।
নিয়মিত সেবনে মধু দৃষ্টি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে, জিহ্বার জড়তা দূর করে এবং অটুট যৌবন ধরে রাখে।
মধু হৃদপিন্ডকে সতেজ রাখে ও মনে প্রশান্তি দান করে।
ফুল-ফল ও ঋতুর বিভিন্নতার জন্য মধুর ঘনত্ব ও গুণাগুণও বিভিন্ন রকমের হয়। মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে। ফুলের পরাগের মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪ থেকে ৪৩ শতাংশ ফ্রুক্টোজ, ০.৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫-১২ শতাংশ মন্টোজ।
আরো থাকে ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ এবং ১১ ভাগ এনকাইম।
এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই।
১০০ গ্রাম মধুতে থাকে ২৮৮ ক্যালরি।
মধুর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫, বি৬, আয়োডিন, জিংক ও কপার সহ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান যা আমাদের শুধুমাত্র দেহের বাহ্যিক দিকের জন্যই নয়, দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সুরক্ষায়ও কাজ করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম মধুতে ৩৪০ থেকে ৩৬০ কিলো-ক্যালরী পরিমানএনার্জি থাকে।
এছাড়াও থাকেঃ
পানি ৩.৬–১৭1.১গ্রাম
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) 0.0২ – 0.১১মিলিগ্রাম
মোটকার্বোহাইড্রেট ১৭.৩ – ৮২.৪গ্রাম
ফসফরাস (পি) ২ – ১৫মিলিগ্রাম
ফ্রাক্টোজ ৮.১ – 38.5গ্রাম
পাইরিডক্সিন (বি৬) 0.0১ – 0.৩২মিলিগ্রাম
গ্লুকোজ ৬.৫ -৩১.০গ্রাম
সেলেনিয়াম (সে) 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
মাল্টোজ ১.৫গ্রাম – ৭.২গ্রাম
ফলিকঅ্যাসিড (বি৯) 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ০.৬ – ২.৮৫মিলিগ্রাম
তামা (ঘন) 0.0২ – 0.৬মিলিগ্রাম
মোটকার্বোহাইড্রেট ১৭-৮১গ্রাম
অ্যাসকরবিকঅ্যাসিড (সি) ২.২ – ২.৫মিলিগ্রাম
সুগার ১৬-৭৬গ্রাম
আয়রন (ফে) 0.0৩ – ৪মিলিগ্রাম
প্রোটিন ১.১৫-০.৭মিলিগ্রাম
ফিলোচিনন (কে) 0.0২৫মিলিগ্রাম
ভিটামিন <০.০০২-<০.০১মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ (এমএন) 0.0২ – ২মিলিগ্রাম
রিবোফলঅবিন <০.০৬-<০.৩মিলিগ্রাম
ক্রোমিয়াম (সিআর) 0.0১ – 0.৩মিলিগ্রাম
নায়াসিন <০.০৬-<0.৩মিলিগ্রাম
দস্তা (জেডএন) 0.0৫–২মিলিগ্রাম
প্যানটোথেনিকঅ্যাসিড <0.0৫-<0.২৫মিলিগ্রাম
অ্যালুমিনিয়াম (আল) 0.0১ – ২.৪মিলিগ্রাম
ভিটামিনবি -১২এন / এ এন / এ
সীসা (পিবি) ক, খ 0.00১ – 0.0৩মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি 0.১- 0.৫মিলিগ্রাম
আর্সেনিক (আ) ক, খ 0.0১৪ – 0.0২৬মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ১.0 -৪.৮মিলিগ্রাম
লিথিয়াম (লি) 0.২২৫ – ১.৫৬মিলিগ্রাম
আয়রন 0.0৫- 0.২৫মিলিগ্রাম
বেরিয়াম (বা) 0.0১ – 0.0৮মিলিগ্রাম
দস্তা 0.0৩- 0.১৫মিলিগ্রাম
মলিবডেনম (মো) ক 0 – 0.00৪মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ১১.0 -৫0.0 মিলিগ্রাম
বোরন (খ) 0.0৫ – 0.৩মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১.0 -৫.0 মিলিগ্রাম
নিকেল (নি) ক 0 – 0.0৫১মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম 0.৪-২.0 মিলিগ্রাম
ব্রোমাইন (ব্রি) 0.৪ – ১.৩মিলিগ্রাম
সেলেনিয়াম 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
রুবিডিয়াম (আরবি) 0.0৪0 – ৩.৫মিলিগ্রাম
কপার 0.0১- 0.0৫মিলিগ্রাম
ক্যাডমিয়াম (সিডি) ক, খ 0 – 0.00১মিলিগ্রাম
ক্রোমিয়াম 0.00৫- 0.0২মিলিগ্রাম
সিলিকন (সি) 0.0৫ – ২৪মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ 0.0৩- 0.১৫মিলিগ্রাম
ক্লোরিন (সিএল) 0.৪ – ৫৬মিলিগ্রাম
ছাই 0.0৪- 0.২গ্রাম
স্ট্রন্টিয়াম (এসআর) 0.0৪ – 0.৩৫মিলিগ্রাম
সোডিয়াম (না) ১.৬–১৭ মিলিগ্রাম
কোবাল্ট (কো) ক 0.১ – 0.৩৫মিলিগ্রাম
থায়ামাইন (বি১) 0.00 – 0.0১মিলিগ্রাম
সালফার (এস) 0.৭ – ২৬মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম(সিএ) ০৩–৩১ মিলিগ্রাম
ফ্লোরাইড (এফ) 0.৪ – ১.৩৪মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন(বি2) 0.0১ – 0.0২মিলিগ্রাম
ভেনিয়াম 0 – 0.0১৩মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম (কে) ৪0 – ৩৫00মিলিগ্রাম
আয়োডাইড (আই) ১0 – ১00মিলিগ্রাম
বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ মধু কি?
বাংলাদেশের সুন্দরবনের মধু স্বাদ, রং, হালকা সুগন্ধ এবং ঔষধিগুণাবলীর জন্য প্রসিদ্ধ। সুন্দরবনের বেশীরভাগ মধু খলসে ফুল থেকে উৎপন্ন। সুন্দরবনের বাওয়ালী সম্প্রদায়ের লোকেরা মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রয় করে জীবন নির্বাহ করে।
কুরআন ও হাদিসের আলোকে মধুর গুনাগুণ কি?
আল কুরআনে মধুর বর্ণনা
আরবি পরিভাষায় মধুপোকা বা মৌমাছিকে ‘নাহল’(نحل) বলা হয়। পবিত্র কোরআনে এই নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা বিদ্যমান আছে। সূরা নাহল এর আয়াত ৬৯-এ আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ “তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার”
মধু হচ্ছে ওষুধ এবং খাদ্য উভয়ই। মধুকে বলা হয়- বিররে এলাহি ও তিব্বে নব্বী। অর্থাৎ খোদায়ী চিকিৎসা ও নবী করীম (সা.)- এর বিধানের অন্তর্ভুক্ত। সূরা মুহাম্মদ- এর ১৫ আয়াতে আল্লাহ তায়ালার এরশাদ হচ্ছেঃ “জান্নাতে স্বচ্ছ মধুর নহর প্রবাহিত হবে।”মধুকে আল্লাহ তায়ালা “শেফা” বা নিরাময় বলেছেন।
আল হাদীসে মধুর বর্ণনা
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে হুজুর পাক (সা.) বলেছেনঃ তোমরা দুটি শেফা দানকারী বস্তুকে নিজেদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে নাও। একটি মধু অপরটি কুরআন। -(মিশকাত)।মধু হলো ৯৯ প্রকার রোগের প্রতিষেধক। কারণ, মধু রোগব্যাধি শেফা দানে এক অব্যর্থ মহৌষধ। আর কোরআন দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার গ্যারান্টি। এ দুটির দ্বারা বহু শতাব্দী ধরে মানুষ অশেষ উপকৃত হয়ে আসছে। আমাদের প্রিয় নবী হুজুর পাক (সা.) মধু খেতে বড়ই ভালো বাসতেন।
রাসুল (সাঃ) মধুকে অভিহিত করেছেন “খাইরুদ্দাওয়া” বা মহৌষধ হিসেবে। তিনি আরোও বলেছেনঃ “ কোরআন হলো যে কোন আত্মিক রোগের প্রতিকার এবং মধু হলো যে কোন দৈহিক রোগের প্রতিকার” -(ইবনে মাজাহ)।
বুখারী শরীফের বর্ননা মতে রাসূল (সাঃ) মধু এবং হালুয়া ভালোবাসতেন। সাহাবায়ে কেরাম-এর অনেকেই সর্বরোগে মধু ব্যবহার করার উপদেশ দিতেন।পবিত্র হাদিস শরিফে মধু সম্পর্কে প্রচুর রেওয়ায়াতে আছে।
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)- এর মতে সকল পানীয় উপাদানের মধ্যে মধু সর্বোৎকৃষ্ঠ। তিনি বলেনঃ “মধু এবং কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের চিকিৎসা নেয়া উচিত।” -(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাকেম, ইবনে মাজাহ)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন যে, “রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি প্রত্যেক মাসে তিন দিন ভোরের মধু চেটে খায় তার কোন বড় বিপদ হতে পারে না।” -(ইবনে মাজাহ, বয়হাকী, ইবনে মাজাহ) ।
রাসূলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং সকাল বেলা খালি পেটে মধুর শরবত পান করতেন। যারা নিয়মিতভাবে মধুর শরবত পান করতে না পারবে তাদের জন্য তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি মাসে তিন দিন সকাল বেলা মধু চেটে সেবন করবে, ওই মাসে তার কোন কঠিন রোগব্যাধি হবে না।”
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরোও বলেছেনঃ “যে কেহ আরোগ্য কামনা করে, তার ভোরের নাশতা হিসাবে পানি মিশ্রিত মধু পান করা উচিত”
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেনঃ “আল্লাহর শপথ যে ঘরে মধু আছে অবশ্যই ফেরেস্তারা সে ঘরের অধিবাসীদের মাগফেরাত কামনা করেন।
কোন ব্যক্তি যদি মধুপান করে তবে যেন তার পেটে লক্ষ ওষুধ স্থির হলো এবং পেট হতে লাখ রোগ বের হয়ে গেল। আর যদি সে পেটে মধু ধারণ অবস্থায় মারা যায় তবে তাকে দোজখের আগুন স্পর্শ করে না” – (নেয়ামুল কোরআন)।
মধু কেন খাবো?
আসুন মধুর খাদ্য উপাদান বিষয়ে প্রথমে একটি পরিসংখ্যান পড়ে নেইঃ
প্রতি ১০০ গ্রাম মধুতে ৩৪০ থেকে ৩৬০ কিলো-ক্যালরী পরিমান এনার্জি থাকে।
এছাড়াও থাকেঃ
পানি ৩.৬–১৭1.১গ্রাম
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫) 0.0২ – 0.১১মিলিগ্রাম
মোটকার্বোহাইড্রেট ১৭.৩ – ৮২.৪গ্রাম
ফসফরাস (পি) ২ – ১৫মিলিগ্রাম
ফ্রাক্টোজ ৮.১ – 38.5গ্রাম
পাইরিডক্সিন (বি৬) 0.0১ – 0.৩২মিলিগ্রাম
গ্লুকোজ ৬.৫ -৩১.০গ্রাম
সেলেনিয়াম (সে) 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
মাল্টোজ ১.৫গ্রাম – ৭.২গ্রাম
ফলিকঅ্যাসিড (বি৯) 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ০.৬ – ২.৮৫মিলিগ্রাম
তামা (ঘন) 0.0২ – 0.৬মিলিগ্রাম
মোটকার্বোহাইড্রেট ১৭-৮১গ্রাম
অ্যাসকরবিকঅ্যাসিড (সি) ২.২ – ২.৫মিলিগ্রাম
সুগার ১৬-৭৬গ্রাম
আয়রন (ফে) 0.0৩ – ৪মিলিগ্রাম
প্রোটিন ১.১৫-০.৭মিলিগ্রাম
ফিলোচিনন (কে) 0.0২৫মিলিগ্রাম
ভিটামিন <০.০০২-<০.০১মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ (এমএন) 0.0২ – ২মিলিগ্রাম
রিবোফলঅবিন <০.০৬-<০.৩মিলিগ্রাম
ক্রোমিয়াম (সিআর) 0.0১ – 0.৩মিলিগ্রাম
নায়াসিন <০.০৬-<0.৩মিলিগ্রাম
দস্তা (জেডএন) 0.0৫–২মিলিগ্রাম
প্যানটোথেনিকঅ্যাসিড <0.0৫-<0.২৫মিলিগ্রাম
অ্যালুমিনিয়াম (আল) 0.0১ – ২.৪মিলিগ্রাম
ভিটামিনবি -১২এন / এ এন / এ
সীসা (পিবি) ক, খ 0.00১ – 0.0৩মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি 0.১- 0.৫মিলিগ্রাম
আর্সেনিক (আ) ক, খ 0.0১৪ – 0.0২৬মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ১.0 -৪.৮মিলিগ্রাম
লিথিয়াম (লি) 0.২২৫ – ১.৫৬মিলিগ্রাম
আয়রন 0.0৫- 0.২৫মিলিগ্রাম
বেরিয়াম (বা) 0.0১ – 0.0৮মিলিগ্রাম
দস্তা 0.0৩- 0.১৫মিলিগ্রাম
মলিবডেনম (মো) ক 0 – 0.00৪মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ১১.0 -৫0.0 মিলিগ্রাম
বোরন (খ) 0.0৫ – 0.৩মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১.0 -৫.0 মিলিগ্রাম
নিকেল (নি) ক 0 – 0.0৫১মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম 0.৪-২.0 মিলিগ্রাম
ব্রোমাইন (ব্রি) 0.৪ – ১.৩মিলিগ্রাম
সেলেনিয়াম 0.00২ – 0.0১মিলিগ্রাম
রুবিডিয়াম (আরবি) 0.0৪0 – ৩.৫মিলিগ্রাম
কপার 0.0১- 0.0৫মিলিগ্রাম
ক্যাডমিয়াম (সিডি) ক, খ 0 – 0.00১মিলিগ্রাম
ক্রোমিয়াম 0.00৫- 0.0২মিলিগ্রাম
সিলিকন (সি) 0.0৫ – ২৪মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ 0.0৩- 0.১৫মিলিগ্রাম
ক্লোরিন (সিএল) 0.৪ – ৫৬মিলিগ্রাম
ছাই 0.0৪- 0.২গ্রাম
স্ট্রন্টিয়াম (এসআর) 0.0৪ – 0.৩৫মিলিগ্রাম
সোডিয়াম (না) ১.৬–১৭ মিলিগ্রাম
কোবাল্ট (কো) ক 0.১ – 0.৩৫মিলিগ্রাম
থায়ামাইন (বি১) 0.00 – 0.0১মিলিগ্রাম
সালফার (এস) 0.৭ – ২৬মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম(সিএ) ০৩–৩১ মিলিগ্রাম
ফ্লোরাইড (এফ) 0.৪ – ১.৩৪মিলিগ্রাম
রিবোফ্লাভিন(বি2) 0.0১ – 0.0২মিলিগ্রাম
ভেনিয়াম 0 – 0.0১৩মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম (কে) ৪0 – ৩৫00মিলিগ্রাম
আয়োডাইড (আই) ১0 – ১00মিলিগ্রাম
উপরের খাদ্য উপাদান গুলোই বলে দিচ্ছে মধু কেন খাবেন।
– মধু হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
-মধু রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদপেশির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।
– মধু দাঁতকে পরিষ্কার ও শক্তিশালী করে এবং দৃষ্টিশক্তি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে।
– মধুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
– মধুর ক্যালরি রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়, যারা রক্ত স্বল্পতায় বেশি ভোগে বিশেষ করে মহিলারা, তাদের জন্য নিয়মিত মধু সেবন অত্যন্ত ফলদায়ক।
– মধু গ্লাইকোজেনের লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগের উপকারি।
– আলসার ও গ্যাস্ট্রিক রোগের জন্য মধু উপকারী, এছাড়াও নিয়মিত মধু খেলে বার্ধক্য দেরিতে আসে।
– শিশুদের মুখের ভেতর পচনশীল ঘায়ের জন্য খুবই উপকারী।
– ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মধু স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কলা সুদৃঢ় করে।
– মধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ক্ষুধা এবং হজমশক্তি ও রুচি বৃদ্ধি করে।
– মধু রক্ত পরিশোধন করে এবং শরীর ও ফুসফুসকে শক্তিশালী করে।
– মধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে এবং বাতের ব্যথা উপশম করে।
– গলা ব্যথা, কাশি-হাঁপানি এবং ঠাণ্ডা জনিত রোগে মধু বিশেষ উপকারী।
– মধু শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে শরীর হয়ে উঠে সুস্থ, সতেজ এবং কর্মক্ষম।
মধু হলো প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত অত্যন্ত উপকারী খাদ্য।
প্রাচীনকাল থেকে এটি রোগ নিরাময়ে এবং প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
চিকিৎসা শাস্ত্রে এটিকে মহা ঔষধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
কোরআন হাদিসেও বলা হয়েছে মধুর কথা।
ডায়াবেটিস রোগীরা কি মধু খেতে পারবেন?
ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় মধু খাওয়া কতটা এবং কিভাবে স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মৃদু বিতর্ক আছে।
কোন ডায়াবেটিস রোগী যদি স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের ইচ্ছামাফিক মধু খান তবে এটা বাজারের অন্য কোনো মিষ্টিদ্রব্য যেমন- রসগোল্লা, চমচম বা সন্দেশ খাওয়ার চেয়ে বড় মাত্রার ক্ষতি হতে পারে।
কেন হবে তা আমরা মধুর উপাদানের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি। মধুতে ২৫-৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ, ৩৪-৪৩ শতাংশ ফ্রুকটোজ, ০.৫-৩ শতাংশ সুক্রোজ ও ৫-১২ ম্যালটোজ থাকে। গ্লুকোজ তো আছেই, বাকি শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ গৃহীত মধুর প্রায় ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ গ্লুকোজে পরিণত হচ্ছে। প্রতি গ্রাম মধু থেকে ১.৮৮ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে সামান্য পরিমাণে প্রোটিনও পাওয়া যায়।
তবে ডায়াবেটিস রোগীরা মধু একেবারেই খেতে পারবেন না, তা নয়। তবে যতটুকু মধু খাবেন, তার সমতুল্য পরিমাণ শর্করা জাতীয় খাদ্য ওই বেলা কম খেতে হয়। মধু একটি ঘন শর্করা জাতীয় খাদ্য।
আর একসাথে বেশি পরিমাণ মধু কোনোভাবেই খাওয়া উচিত হবে না। এক চামচ মধু খাওয়ার জন্য প্রায় দেড় কাপ ভাত, ছোট একটি রুটি খাওয়া বাদ দিতে হবে।
কেউ যদি এরূপ হিসাব মেনে নিয়ে মধু খেতে পারেন তবে তার জন্য খুব ক্ষতিকর হবে না।
আর এটা করা কোন ডায়াবেটিস রোগীর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ালে তার জন্য মধু বর্জন করাই ভালো।
মধু খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি কি? কিভাবে মধু খেলে বেশী উপকার পাবো?
আসলে মধু সেবনের কোন নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা নিয়ম কানুন নেই। রাসুল সাঃ সকাল বেলা খালি পেটে মধুর শরবত পান করতেন। কেউ যদি নিয়মিত ভাবে তা পান করতে না পারেন, তাহলে রাসুল সাঃ তাদের জন্য কমপক্ষে মাসে তিন দিন সকাল বেলা মধু চেটে খেতে বলেছেন, তাহলে ঐ মাসে তার কোন কঠিন রোগ হবে না বলে বলেছেন। ( ইবনে মাজাহ)
সুস্থ অসুস্থ যে কেউ মধু খেতে পারেন। একজন পুর্নবয়স্ক সুস্থ মানুষ একবারে ৫০/৬০ গ্রাম মধু অনায়াসে খেতে পারেন। একজন পু্র্নবয়স্ক মানুষ স্বাভবিক ভাবেই যখন যেভাবে খুশী মধু খেতে পারেন, তবে সেটা দৈনিক ১৫০ গ্রামের বেশী হওয়া উচিত নয়। আর কারোও অভ্যেস না থাকলে হঠাৎ করে বেশী মধু পান করাও ঠিক নয়। আর হজমের গোলমাল, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস প্রভৃতিরোগে আধা চা-চামচ এর বেশি মধু না খাওয়াই ভালো। বেশি খেতে চাইলে শর্করা জাতীয় খাদ্য ভাত, রুটি, আলু কমিয়ে খেতে হবে। অন্যথা মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে পরিমিত পরিমাণ খেলে মোটা হওয়ার ভয় নেই।
রোগ নিরাময়ের জন্য কখনো এককভাবে, আবার কখনো ভেষজ দ্রব্যের সঙ্গে মিশ্রিত করে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় সফলতার সঙ্গে মধু ব্যবহার হয়ে আসছে।
রাসূল (সা.) বলেছেন, মধু হৃদপিন্ড কে সতেজ করে। প্রতিদিন হাতের তালুতে অল্প পরিমাণ মধু নিয়ে চেটে খেলে হৃদরোগ থাকে না।
জার্মান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ই কচ বলেছেনঃ ‘উপযুক্ত ঘাস খেয়ে ঘোড়া যেমন তেজী হয় তেমনি নিয়মিত সকালে এক চা-চামচ করে খাঁটি মধু খেলে হৃদপিন্ড শক্তিশালী হয়।
সাধারন ভাবে কোন পুর্নবয়স্ক মানুষের জন্য সকাল বেলা খালি পেটে এক চা-চামচ। বিকেল বেলা কাঠবাদাম/ আখরোট এর সাথে দু চামচ এবং রাতে ঘুমানোর পুর্বে এক গ্লাস দুধ, তিনটি খেজুর এবং তিন চামচ মধু একসাথে সেবন করা যায়। পাশাপাশি দৈনন্দিন চা, কফিতেও চিনির বদলে মধু ব্যবহার করা যায়। এর পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি প্রচলিত আছে, যে পদ্ধতি তে মধু খেলে আপনি ভীষণ উপকার পাবেন। যেমনঃ
– মধু খাওয়ার সবথেকে ভালো সময় সকালে খালি পেটে দু টেবিল চামচ মধু খাওয়া।
– লেবুর রসের সঙ্গে কাঁচা মধু মিশ্রিত করে খেলে অ্যাসিডিটি কমে।
– হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিবার ভারি খাবার খাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন।
– রক্তনালীর সমস্যা দূর করতে মধুর সঙ্গে দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে ভাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও মধু ও দারচিনির এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।
– লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে ও লিভার পরিস্কার থাকে।
– যৌন দুর্বলতা কাটাতে প্রতিদিন ছোলার সঙ্গে মধু সেবনে ভালো ফল পাওয়া যায়।
– দুই চা চামচের সমপরিমাণ মধু ও বাসকপাতার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও কাশি সেরে যায়।
– তুলসী পাতার এক চা চামচ রস ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই কাশি দূর হয়।
– কচি বেল ও আমগাছের কচি চামড়া বাটার সঙ্গে গুড় ও মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়।
– মধুর সঙ্গে গুড়ের রস মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়ে যায়।
– এক চা চামচ আদার রস এবং এক চা চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও সন্ধেবেলা খেলে সর্দি সেরে যায় ও খিদে বৃদ্ধি পায়।
– সকালে মধু খেলে ওজন কমে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে কিছুদিনের মধ্যেই। এছাড়াও এতে লিভার পরিস্কার থাকে।
– হজমের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। মধু পেটের অম্লভাব কমিয়ে হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজমের সমস্যা দূর করার জন্য মধু খেতে চাইলে প্রতিবার ভারি খাবার খাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে এক/দু চামচ মধু কিন্তু খুবই উপকারী।
– মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি, যা শরীরে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। বিশেষ করে যারা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে পছন্দ করেন, তারা অন্য মিষ্টি খাবারের বদলে মধু খেতে পারেন।
কোন নির্দিষ্ট রোগের জন্য কিভাবে খেতে হবে সেগুলো যথাসম্ভব নীচের প্রশ্নোত্তরে দেয়া আছে।
একজন মানুষ দৈনিক কতটুকু পরিমান মধু খেতে পারে?
একজন পুর্নবয়স্ক মানুষ দৈনিক সর্বোচ্চ ১৫০ গ্রাম মধুও খেতে পারবেন।
মধু খাওয়ার ব্যাপারে কোন সতর্কতা আছে কি?
হ্যা, মধু খাওয়ার ব্যাপারে কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। যেমনঃ
– অতিরিক্ত গরম পানি বা খুব বেশী গরম দুধের সাথে (চা যেমন আমরা গরম গরম খাই) মধু মিশিয়ে খাওয়া ঠিক না।
– মধু কখনো সরাসরি গরম অথবা রান্না করে খাবেন না।
– দুধের সাথে মধু খেতে চাইলে আগে দুধ হাল্কা উষ্ন এমন ঠান্ডা করে নিন।
– রাতে ঘুমানোর পুর্বে শুধু মধু খাবেন না, মধু শরীর কে চাঙ্গা করে তোলে বিধায় ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে।
– যৌনমিলনের অন্তত একঘন্টা পুর্বে মধু সেবন করবেন না। তাৎক্ষনিক প্রভাবে মধু যৌনাকাঙ্খাকে স্তিমীত করে দেয়। তবে অন্য সময়ে নিয়মিত সেবনে এই ক্ষেত্রে এটা অত্যন্ত ফলদায়ক।
আপনারা কতদিন যাবৎ মধুর ব্যবসা করছেন?
আমরা ১৯৮৮ সাল হতে ঢাকা এবং ১৯৮৯ সাল হতে চট্টগ্রামে আপনাদের সাথে পথ চলছি, ভবিষ্যতেও চলব ইনশাআল্লাহ।
আপনাদের ঠিকানা কোথায়?
আমাদের চট্টগ্রাম বিক্রয় কেন্দ্রঃ ৪৩, দেওয়ানজী পুকুর লেন, দেওয়ানবাজার, চট্টগ্রাম, ফোনঃ ০১৯১৯৪৪২৩৮৫
আপনারা কি শুধু মধুই বিক্রি করেন নাকী আরোও কিছু আছে?
মধুর পাশাপাশি আমরা আমাদের পুরোনো কাস্টমারদের জন্য খাঁটি ঘি ও কাঠের ঘানি ভাঙ্গা সরিষার তেল বিক্রি করি, যেগুলোর পাবলিসিটি করা হয় না। পাশাপাশি অলিভ অয়েল এবং কারোজিরার তেল পাবেন, তবে নিয়মিত নয়।
আপনারা কোথেকে মধু সংগ্রহ করেন?
আমরা সারা বাংলাদেশে, বিশেষ করে সাতক্ষীরা, সুন্দরবন, রাজশাহী, জামালপুর ও সিরাজগন্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মধু সংগ্রহ করি।
আপনারা কিভাবে মধু সংগ্রহ করেন?
আশ শেফার নিজস্ব প্রতিনিধি সামনে উপস্থিত থাকাকালীন প্রতিটি চাক ভাঙা হয়।
আপনাদের মধু খাঁটি কিনা কিভাবে বুঝবো?
যদি মধু সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা ও জানাশোনা থেকে থাকে তবে আমাদের মধু খাঁটি কিনা মুখে দিলেই বুঝে যাবেন। আর মধু সম্পর্কে যদি আপনার অভিজ্ঞতা ও জানাশোনা না থাকে তবে একমাত্র ল্যাব টেস্ট ছাড়া আপনার বোঝার আর কোন উপায় নেই।
বিস্তারিত এখানে দেখুন..
আপনারা যেখান থেকে মধু আনেন সেখান থেকেই ভেজাল দিয়ে দেয় কিনা কিভাবে বুঝেন?
ভেজাল দেয়ার কোন সুযোগ নেই, কারন আশ শেফার নিজস্ব প্রতিনিধি সামনে উপস্থিত থাকাকালীন প্রতিটি চাক ভাঙা হয়।
ভেজাল মধু কিভাবে বানায়?
চিনি, মধু ও হানি ফ্লেভার দ্বারা ভেজাল মধু বানানো হয়ে থাকে।
আপনাদের কাছে কি কি মধু আছে?
আমাদের কাছে সাধারনত সুন্দরবনের খলিসা,গড়ান ফুলের মধু,সরিষা,লিচু, ধনিয়া, বড়ই, কালোজিরা, তাল ইত্যাদি ফুলে মধু থাকে। লেটেস্ট আপডেটের জন্য সরাসরি ফোন দিয়ে জেনে নিতে পারেন।
আপনাদের মধু কি চাষের মধু?
হ্যা, আমাদের প্রাকৃতিক চাক ও চাষ, দুই ধরনেরই মধু আছে
আপনাদের মধুর দাম কেমন?
বিস্তারিত এখানে দেখুন
আপনাদের মধু এতো দাম কেন?
দুষ্প্রাপ্যতা, চাহিদার তুলনায় প্রতুলতা, মধুর সিজন, মান ও গুনের সাথে সঙ্গতি রেখে মধুর ন্যায্য দাম নির্ধারন করা হয়ে থাকে। আমাদের মধুর দাম কখনোই অস্বাভাবিক কম হয় না, আবার অস্বাভাবিক বেশীও হয় না এবং দাম তেমন একটা ওঠানামাও করে না, সাধারনত বছরজুড়ে আমাদের মধুর দাম একই থাকে।
আপনারা কি মধু পাইকারী বিক্রয় করেন?
না, আমরা পাইকারী মধু বিক্রয় করি না।
আমি নিয়মিত/ বেশি করে মধু নিবো, আমার জন্য কি দাম কমিয়ে রাখা যাবে?
নিয়মিত ক্রেতাদের জন্য আমরা ছাড়ে মধু দিয়ে থাকি তবে কেউ নিয়মিত কেনার প্রতিশ্রুতি দিলেই তিনি ছাড় পান না। কেউ নিয়মিত নিতে থাকলে তবেই তিনি অটোমেটিক ছাড়ের আওতাভুক্ত হয়ে যান, এজন্য তাকে অনুরোধ করারও প্রয়োজন হয় না। সাধারনত তিনবারের পর থেকেই একজন কাস্টমারকে নিয়মিত কাস্টমার বিবেচনা করা হয়।
কোন মধু সবচেয়ে ভালো?
আসলে প্রত্যেক মধুই “সবচেয়ে ভালো” যদি সেটা খাঁটি হয়। তারপরও যদি বলতে হয় তবে বলা যায় গুনে ও মানে সুন্দরবনের খলসে ফুলের মধু সবচাইতে সেরা, যার আরেক নাম পদ্ম মধু (পদ্ম ফুলের মধু নয়, শুধু পদ্ম মধু)। এর পরের স্থানে আছে কালোজিরা যা ভেষজ গুনে মানে অনন্য ( ঠান্ডা জনিত কারনে, শারিরীক দুর্বলতার রোগীদের জন্য দারুন কার্যকর )। সরিষা ও লিচু ফুলের মধু খেতে দারুন স্বাদ ( যারা নতুন মধু খাচ্ছেন এবং শিশুদের জন্য), ধনিয়া ফুলের মধু প্রচুর মিষ্টি ও মজাদার ( চিনির বিকল্পে ও বেকারীর জন্য ) এবং তাল ফুলের মধুর (বৃদ্ধ ও শারিরীক অক্ষমদের জন্য খুবই উপকারী) কথা বলতে হয়।
ছোট বাচ্চাদের কি মধু খাওয়ানো যাবে?
ছয় মাস থেকে এক বছরের অধিক বয়েসী বাচ্চাদের এক/দেড় চা চামচ মধু সরাসরি বা দুধের সাথে খাওয়ানো যাবে। ছয় মাস বা তার কম বয়েসী বাচ্চাদের সরাসরি দৈনিক এক থেকে দু ফোঁটা বেশী খাওয়ানো উচিত নয়।
শিশুদের জন্য কোন মধু ভালো হবে?
শিশুদের জন্য মুখরোচক মধুই সবচেয়ে ভালো, যেমন কালোজিরা, লিচু, সরিষা, ধনিয়া ফুলের মধু।
বৃদ্ধদের জন্য কোন মধু ভালো হবে?
বৃদ্ধদের জন্য কালোজিরা ও তাল ফুলের মধুই সবচাইতে ভালো।
আপনাদের কাছে কি পদ্ম ফুলের মধু আছে?
না আমাদের কাছে পদ্ম ফুলের মধু নেই। আসলে পৃথিবীতে পদ্ম ফুলের মধু বলতে কোন মধুই নেই। পদ্ম ফুল থেকে মধু হয় না, কারন এ ফুলে সুধা হয় না (ফুলের যে অংশটা দিয়ে মৌমাছি মধু বানায়)। তাই মধুও হয় না। মৌমাছি পদ্ম ফুল থেকে শুধুমাত্র পরাগ আহরন করে নিজেদের খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য। যে বা যারা পদ্ম ফুলের মধু আছে বা দেবে বলে দাবী করে তারা ভুল বলে, বা অজ্ঞতাবশত বলে। তবে সুন্দরবনের খলিসা ফুলের মধুকে অনেকেই পদ্ম মধু বলে ডাকে। ( পদ্ম ফুলের মধু না, শুধু পদ্ম মধু)।
রয়্যাল জেলী কি?
কর্মী মৌমাছিরা রানী মৌমাছির জন্ম দেয়ার জন্য ডিম্বানু/ বাচ্চাকে যে সকল বিশেষ তরল খাওয়ায় তাকে রয়েল জেলী বলা হয়ে থাকে।
আপনাদের কাছে রয়্যাল জেলী আছে?
না, রয়্যাল জেলী দেখে এবং চিনে মৌচাক থেকে আলাদা করা খুবই কঠিন যেহেতু পরিমানে খুবই অল্প থাকে। এটা সংগ্রহ করা খুবই দুঃসাধ্য ও অসম্ভব। দেশি বিদেশী কোন কোন প্রতিষ্ঠান খুবই চড়া দামে রয়্যাল জেলী বিক্রয় করে থাকে। যা পরিমানে খুব অল্প।
মধু কিভাবে কিনবো?
প্রথম পদ্ধতিঃ
১. প্রথমে আমাদের শপিং পেইজ থেকে পছন্দ অনুযায়ী পণ্য নর্বাচন করুন এবং আপনার কার্টে যুক্ত করুন।
২. তারপর পেমেন্ট করুন, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পেমেন্ট অপশন নির্বাচন করুন। ডেলিভারী বুঝে নিন, অর্ডার কর্নফার্মেশনের দিন হতে সর্বোচ্চ ২ (দুই) কার্য দিবসের মধ্যে কাঙ্খিত পন্য হাতে পেয়ে যান।
দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ
সরাসরি ফোন দিন কাস্টমার কেয়ার 01919442385 নাম্বারে। বিস্তারিত আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্ত লেনদেনের সমস্ত প্রকৃয়া বুঝে নিন।
পেমেন্ট কিভাবে করব?
পরিবহনের মাধ্যমে কন্ডিশনে নিলে পরিবহনেই পেমেন্ট করে মধু বুঝে নেবেন, অথবা কন্ডিশনে না নিলে মধু হাতে পেয়ে বিকাশে মুল্য পরিশোধ করবেন।
আমার কাছে আপনারা মধু কিভাবে পাঠাবেন?
সাধারনত আমরা স্টেডফার্স্ট কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কন্ডিশনে মধু দিয়ে থাকি।
কন্ডিশন বিষয়টা কি?
ক্যাশ অন ডেলিভারী ( COD) কে সংক্ষিপ্তে কন্ডিশনে পন্য পাঠানো বলা হয়ে থাকে।
আমি প্রবাসে থাকি, আমি কিভাবে মধু নিতে পারি?
প্রবাসে আপনার পরিচিত কেউ দেশ হতে গেলে হাতে হাতে মধু দিয়ে দেয়া যেতে পারে। আর আন্তর্জাতিক কুরিয়ার মাধ্যম ( যেমন DHL) ব্যাবহার করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে খরচের কারনে মধুর দাম তিন থেকে পাঁচ গুন বৃদ্ধি পাবে।
মধু কিভাবে সংরক্ষণ করব?
পানি, দূষিত বায়ু ও অতিরিক্ত গরমে মধু নষ্ট হয়ে যায়। ধাতব কিংবা প্লাষ্টিকের দ্রব্যে এবং বিশেষ করে ফ্রীজে মধু রাখলে মধুর স্বাভাবিক গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়, সেজন্য ধাতব দ্রব্যে এবং ফ্রীজে মধু রাখা নিষেধ, বিশেষ প্রয়োজনে প্লাষ্টিকের দ্রব্যে মধু বহন এবং সাময়িক সময়ের জন্য রাখা যেতে পারে তবে দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষনের ক্ষেত্রে মধুর স্বাভাবিক গুনাগুন অক্ষুণ্ণ রাখতে চাইলে সিরামিক বা কাঁচের পাত্রই সর্বোত্তম। সেজন্য ‘আশ্-শেফা মধু’ সর্বদাই কাঁচের পাত্রে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
মধু জমে যায় কেন?
কিছু মধুর জমে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তরল থেকে দানাদার অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন (granulation) বা কঠিন বাংলায় স্ফটিকায়ন বলে। মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু যত দ্রুত জমে, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত জমে না। প্রতিটি মধুর স্ফটিকায়নের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। ওই সময়ের মধ্যে মধু যদি না জমে তবে সম্ভাবনা আছে যে ওই মধুতে ভেজাল আছে।
জমে যাওয়ায় মধুর রং বদলে যায়, তরল থেকে দানাদার হয়ে যায় কিন্তু মধুর গুণগত মান কমে না। মোটা দাগে বলতে গেলে মধু হলো একটি ঘন শর্করা দ্রবণ। সাধারণত এতে ৭০% এর বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। তার মানে স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। চিনির মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এমনভাবে প্রকৃতিকে সৃষ্টি করেছেন যে সে ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। একারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়। পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ স্ফটিক আকারে জমতে থাকে। আর দ্রবণটি আস্তে আস্তে সাম্যাবস্থার দিকে যায়।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, একই সময়ে কেনা দুটো মধুর মধ্যে একটা মধু জমে যাচ্ছে, আরেকটা যাচ্ছে না কেন?
মধুর শর্করাতে প্রধানত প্রধান অণু থাকে – গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের পরিমাণ একেক মধুতে একেকরকম থাকে। সাধারণভাবে ফ্রুক্টোজ ৩০-৪৪% এবং গ্লুকোজ থাকে ২৫-৪০%। বিভিন্নজাতের মধু বিভিন্ন হারে স্ফটিকায়িত হয়। এ হার ১-২ মাস থেকে ২ বছর হতে পারে। গ্লুকোজের দ্রবণীয়তা কম, এটি স্ফটিকায়ন হয় দ্রুত। যে মধুতে গ্লুকোজ বেশি জমে তাড়াতাড়ি (সরিষা ফুলের মধু)। যে মধুতে গ্লুকোজ কম এবং পানি বেশি সেটা জমে ধীরে ধীরে (সুন্দরবনের মধু)।
কিছু মধু পুরোপুরি পুরোপুরি জমে যায় (সরিষা ফুলের মধু)। আবার কিছু মধুতে নিচে স্ফটিক আর উপরে তরলের একটি স্তর থাকে। মধুর প্রকারের ভিত্তিতে স্ফটিকের আকারও বিভিন্ন রকম হয়। মধু যত দ্রুত স্ফটিকায়িত হয়, স্ফটিক তত পাতলা হয়। স্ফটিকায়িত মধুর রঙ তুলনামূলকভাবে মলিন হয়।
এছাড়া আরো কিছু নিয়ামক রয়েছে যা স্ফটিকায়ন শুরু করা, তরান্বিত করা ও স্লথ করায় ভূমিকা রাখে। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ছাড়া মধুর অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট উপাদান, এমাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ, এসিড ইত্যাদিও স্ফটিকায়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এছাড়া ধুলা, পরাগরেণু, মোমের কণা বা বহিরাগত স্ফটিকের উপস্থিতিতেও স্ফটিকায়ন তরান্বিত হতে পারে।
তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও প্যাকেটজাত করার ধরণও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। মধুর ধরনের উপর ভিত্তি করে কক্ষ তাপমাত্রায় স্ফটিকায়ন শুরু হতে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস এবং বিরল ক্ষেত্রে কয়েক দিন লাগতে পারে।
এক চামচ স্ফটিকায়িত মধু তরল মধুতে যোগ করলে বাকি মধু দ্রুত জমে যাবে।
মধু জমে গেলে কিভাবে তরল করব?
মধু জমে গেলে রোদে অথবা মধুর পাত্র গরম পানিতে রেখে তরল করে নিতে হবে। সরাসরি ফুটন্ত পানিতে মধুর পাত্র দেয়া যাবে না। প্লাস্টিকের পাত্র হলে সহনীয় মাত্রার গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।
সর্দি, কাশি ও স্বরভঙ্গে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
রং চায়ের সঙ্গে মধু ও আদার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও শ্লেষ্মা রেগের উপশম হয় (১ চামচ মধু + ১ চামচ আদার রস)।
দুই চা চামচের সমপরিমাণ মধু ও বাসকপাতার রস মিশিয়ে খেলে সর্দি ও কাশি সেরে যায়।
তুলসী পাতার এক চা চামচ রস ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই কাশি দূর হয়।
সৈন্ধব লবণ, আমলকী, পিপুল, মরিচ ইত্যাদির সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে এক চা চামচ করে খেলে কফ ও স্বরভাঙ্গা ভালো হয়।
খাঁটি মধুর সঙ্গে হরীতকী ও বচচূর্ণ মিশিয়ে লেহন করলে (চেটে খেলে) শ্বাসকষ্টের আশু উপকার পাওয়া যায়।
২ চা চামচ মধু ১ গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে সকালে ও সন্ধ্যায় খেলে সর্দিকাশি দূর হয়।
হালকা গরম জলসহ মধু মিশিয়ে গড়গড়া করলে গায়কদের গলার স্বর-শক্তি বৃদ্ধি পায়। অনেকের মতে, এটা টনিকের মতো কাজ করে।
এক চা চামচ আদার রস এবং এক চা চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও সন্ধেবেলা খেলে সর্দি সেরে যায় ও খিদে বৃদ্ধিপায়।
আমাশয়ে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
রক্ত মিশ্রিত পায়খানা, তৈলাক্ত পায়খানা এবং সঙ্গে পেট কামড়ানো থাকলে তাকে আমাশয় বলে।কচি বেল ও আমগাছের কচি চামড়া (বাকল) বাটার সঙ্গে গুড় ও মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়ে যায়।কুল বা বড়ই গাছের ছাল চূর্ণের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে আমাশয় ভালো হয়।
৫০০ গ্রাম আতপ চাল ভেজে গুঁড়া করে এর সঙ্গে ১২৫ গ্রাম ঘি, ২৫০ গ্রাম খাটি মধু, ১২৫ গ্রাম চিনি এবং ২০টি সবরি কলা ভালোভাবে মিশিয়ে (চটকে) জ্বাল দিয়ে খাবার উপযোগী করে ৩/৪ দিন নিয়মিত খেলে সব ধরনের আমাশয় ভালো হয়ে যায়।
ডায়রিয়াতে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
পাতলা পায়খানা থাকলে গরম পানিতে আড়াই চা-চামচ মধু মিলিয়ে শরবত বানিয়ে বারবার সেবন করতে হবে।
ডায়রিয়া হলে খয়ের ও দারুচিনির গুঁড়া সমপরিমাণ সামান্য মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দিনে ৩/৪ বার খেলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। পিপুল ও গোল মরিচের শুকনো গুঁড়ার সঙ্গে মধু মিশিয়ে কিছু দিন নিয়মিত খেলে পুরাতন উদরাময় ভালো হয়ে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এক গ্লাস গরম দুধ বা গরম পানিতে ২চা-চামচ মধু মিশিয়ে কয়েকবার খেতে হবে।
আলসারে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
পানিতে অল্প মধু মিশিয়ে খেলে পাকস্থলীর ক্ষত সারে।
যক্ষ্মা রোগে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
যক্ষ্মা রোগে বাসক পাতার রস এক চা-চামচ পরিমাণ এক চা-চামচ মধু এবং এক চা-চামচ আদার রস মিশিয়ে কিছু দিন খেলে উপকার পাওয়া যাবে। যক্ষ্মা রোগ ভালো হওয়ার জন্য- আধাতোলা পেঁয়াজের রস, ২৫০ গ্রাম ঘি এবং ২৫০ গ্রাম মধু মিশিয়ে একটা পাত্রে রেখে দিয়ে প্রতিদিন সকাল বিকাল খেলে এবং প্রতি রাতে শোয়ার সময় চিনি দিয়ে অল্প পরিমাণ গরম দুধ খেলে ৪/৫ দিনের মধ্যে যক্ষ্মা ভালো হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ।
৫০০ গ্রাম আতপ চাল ভেজে গুঁড়া করে এর সঙ্গে ১২৫ গ্রাম ঘি, ২৫০ গ্রাম খাটি মধু, ১২৫ গ্রাম চিনি এবং ২০টি সবরি কলা ভালোভাবে মিশিয়ে (চটকে) জ্বাল দিয়ে খাবার উপযোগী করে ৩/৪ দিন নিয়মিত খেলে সব ধরনের আমাশয় ভালো হয়ে যায়।
হৃদরোগীদের জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
হৃদরোগীদের জন্য ২ চা চামুচ মধু তিন বেলা আহারের সাথে বা বেদানার রসের সাথে অথবা মধুর এক গ্লাস গরম শরবত ঘুমানোর সময় নিয়মিত সেব্য।
গ্যাষ্ট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
গ্যাষ্ট্রিক আলসারের ক্ষেত্রে ১ বা ২ চা-চামুচ মধু তিন বেলা আহারের আধা ঘন্টা আগে ও ভুলে গেলে চার ঘন্টা পরে নিয়মিত সেব্য।
গ্যাষ্ট্রিকের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
মৌরির পানিতে মধু মিশিয়ে পান করলে দূষিত বায়ুপেট থেকে বেরিয়ে যায়।
রক্তশুন্যতা, অনিদ্রা, মানষিক অস্থিরতা, অম্লতা, শারীরিক দুর্বলতা ও বদ হজমের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
রক্তশুন্যতা, অনিদ্রা, মানষিক অস্থিরতা, অম্লতা, শারীরিক দুর্বলতা ও বদ হজমের ক্ষেত্রে বড় এক চামচ মধু এক গ্লাস তাজা গরম দুধের সাথে খাঁটি গাওয়া ঘি বা মাখন মিশ্রিত ২/১ টা টোস্ট বিস্কুট বা বাকরখানির সাথে সকাল-সন্ধ্যা সেব্য। ক্রীড়াবিদদের জন্য ক্রীড়ার আগে ও পরে ২০ গ্রাম মধু দৈনিক সেব্য। চল্লিশোর্ধ্বে বয়েসে কাঠ বাদামের সাথে মধু নিয়মিত সেব্য।
ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি? ( যারা খেতে চান তাদের জন্য)
ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে খাদ্য নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি দৈনিক ৪ চামচ করে তিন বেলা মোট ২০ গ্রাম মধু সকাল-সন্ধ্যা সেব্য। জন্ডিসের ক্ষেত্রে যাইতুনের তেল বা লেবুর শরবতের সাথে সেব্য।
নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
নিম্ন রক্তচাপের ক্ষেত্রে দৈনিক ৩০ গ্রাম করে এবং উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে (লবনাক্ত খাদ্য পরিত্যাজ্য) ৬০ গ্রাম মধু তিন বেলা আহারের সাথে সেব্য।
শিশুদের দৈহিক গঠন, রুচি বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি ও পেট ভালো রাখার জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
শিশুদের দৈহিক গঠন, রুচি বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি ও পেট ভালো রাখার জন্য প্রত্যহ এক চামচ মধু নাস্তা বা গরম দুধের সাথে অথবা রাতে দুধ বা গরম পানির সাথে সেব্য।
কাটা, ফোঁড়া ও জখমের জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
যাবতীয় কাটা, ফোঁড়া ও জখমে মধুর প্রলেপ এবং চক্ষুরোগে এক ফোঁটা করে দিনে তিনবার লাগাতে হবে।
শরীরের বাইরের কোন অংশের ক্ষততে মধুর প্রলেপ লাগালে অনেক সময় মলমের চেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে মধু বিজ্ঞানী ডাঃ আব্দুল করিম নজীব আল খতীব ও ডাঃ মোঃ নযর আদ দেকারের মতে দৈনিক অর্ধ কেজী মধুই যথেস্ট। নিয়মিত মালিশও ফলদায়ক।
অনিয়মিত স্রাব, গর্ভবতীর অতিরিক্ত বমি ও গর্ভকালীন ও তৎপরবর্তী যত্নের ক্ষেত্রে মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
অনিয়মিত স্রাবের ক্ষেত্রে বড় এক চামচ মধুর শরবত দিনে দুইবার, গর্ভবতীর অতিরিক্ত বমির ক্ষেত্রে বার বার মধুর শরবত বিশেষ ফলদায়ক। গর্ভকালীন পাইলস হওয়া, সন্তান সুস্থ সবল হওয়া ও স্বাভাবিক প্রসবের জন্য তৃতীয় মাস থেকে নিয়মিত রাতে ২ চা-চামুচ মধু, ১ চা চামচ যাইতুনের তেল ও এক চামচ মধু ও কাঠ বাদামের তেলের সাথে সেব্য।
গর্ভধারন পরবর্তী সময়ে মায়েরা অনাকাঙ্খিত শারিরীক ওজন বৃদ্ধি প্রাতিহত করতে স্বাভাবিক ডায়েটের পাশাপাশি ভোরে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর পুর্বে এক চামচ মধুর সাথে দু চামচ কাগজী লেবুর রস এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন, এবং আনুষঙ্গিক দুর্বলতা কাটাতে এক গ্লাস দুধের সাথে দু চামচ মধু্ই যথেস্ট।
মধুর সঙ্গে গুড়ের রস মিশিয়ে খেলে বমি বন্ধ হয়ে যায়।
মুখমন্ডল ও হাতের ত্বক নরম, মসৃণ ও উজ্জল রাখার জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
মুখমন্ডল ও হাতের ত্বক নরম, মসৃণ ও উজ্জল রাখার জন্য এক চা চামচ মধু, বড় এক চামচ গরুর খাঁটি দুধ ও একটি ডিমের সাদা অংশ একত্রে ভালো করে মিশিয়ে লাগান। ৪৫ মিনিট পর গরম পানিতে তুলা ভিজিয়ে মুছে নিন এবং কয়েক মিনিট পর ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
মেদ কমানোর জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
যারা খুব মোটা হচ্ছেন তাদের মেদ কমানোর জন্য মধুর সঙ্গে সামান্য পানি মিশিয়ে খেলে সুফল পাওয়া যায়।
শারিরীক শক্তির জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
এক কাপ দুধে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে রোজ রাতে ঘুমের আগে নিয়মিত খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায়।
শিশুদের দৈহিক গড়ন, রুচি বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি ও হজমশক্তি ভালো রাথার জন্য মধুর ব্যবহার পদ্ধতি কি?
শিশুদের দৈহিক গড়ন, রুচি বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি ও পেট ভালো রাখার জন্য প্রত্যহ এক চা চামচ মধু গরম দুধ ও গরম পানির সঙ্গে নাশতা ও রাতের খাবারের সঙ্গে দিতে হবে। দুর্বল শিশুকে এক ফোঁটা মধু দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুবার খাওয়ালে তার স্বাস্থ্য ভালো হয় ও শক্তি লাভ করে।